ঈদের দ্বিতীয় দিন গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। এই সুযোগে টিকিটেও নৈরাজ্যের অভিযোগ করেছেন দর্শনার্থীরা।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ভিন্নধারার এক বিনোদনকেন্দ্র। যেখানে বিনোদনে প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য আর আধুনিকতার এক অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে।
রোববার দুপুরে পার্কের প্রধান ফটকে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার দর্শনার্থী টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। অপর দিকে টিকিট কেটে একইভাবে সারি ধরে পার্কে প্রবেশ করছে। হঠাৎ কাউন্টারের সামনে একটু জটলার মতো দেখে সেখানে এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, এক দর্শনার্থী তাঁর তিন বছরের শিশুর জন্য টিকিট কিনতে গিয়ে কাউন্টারে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন। প্রবেশ ফি ১২ বছর পর্যন্ত শিশুর জন্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা থাকলেও তাঁর তিন বছরের শিশুর জন্য ৫০ টাকা টিকিট কাটতে বলায় তিনি প্রতিবাদ করছেন। অবশেষে কাউন্টার থেকে ‘নিলে নেন, না নিলে চলে যান’ বলে দেওয়ার পর তিনি টিকিট ৫০ টাকায় নিতেই বাধ্য হলেন। কারণ অনেক দূর থেকে এসে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। অপর দিকে পার্কের সামনে পার্কিং লট ছাড়াও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য গাড়ি। এসব গাড়ি এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে থাকায় দর্শনার্থী প্রবেশে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন।
পার্কের ভেতরে কোর সাফারি পার্কের সামনেও একই চিত্র। হাজার খানেক নারী-পুরুষ-শিশু লাইনে দাঁড়িয়ে কোর সাফারি পার্কের বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করছেন। লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজনের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়।
গাজীপুর সদর থেকে সায়ন্তিকা সরকার নামে চার বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে প্রথমবার সাফারি পার্কে বেড়াতে এসেছেন সুবল চন্দ্র নামের এক ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, কাউন্টার থেকে বলা হয়েছে দুই বছরের শিশুর জন্যও ৫০ টাকার টিকিট কাটতে হবে। তিনি প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানালেন। গাজীপুরের সফিপুর থেকে এসেছেন রাগিব আহমেদ নামের এক শিক্ষক। গেটের সামনের কাউন্টার থেকে নিজের, স্ত্রীর ও তাঁর আড়াই বছর বয়সী শিশুর জন্য চারটি টিকিট ৫০ টাকা করে মোট ২০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। এই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অপর দর্শনার্থী সফিপুর আনসার একাডেমি থেকে এসেছেন ইয়াসিন আহমেদ। তিনি জানান, তাঁরা মোট আটজন ঘুরতে এসেছেন, শিশু আছে তিনজন। শিশুর জন্য টিকিট চাইলেও কাউন্টার থেকে শিশুর কোনো টিকিট নেই বলে জানায়। ফলে তিন শিশুসহ আটজনের জন্য ৫০ টাকা করে ৪০০ টাকায় টিকিট কাটতে হয়েছে।
এ বিষয়ে পার্কের মূল ফটকের ইজারাদারদের একজন সালামত রনির ব্যক্তিগত মোবাইলে অনেকবার ফোন দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। তা ছাড়া এসএমএস পাঠালেও কোনো সাড়া দেননি।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা করে রাখার কথা। এর বেশি নিলে সেটা বেআইনি। আমি ইজারাদারদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। এমনটা করে থাকলে ব্যবস্থা নেব। ঈদ-পরবর্তী দর্শনার্থী কেমন পেলেন, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ঈদের দিনের তুলনায় আজ ঈদের দ্বিতীয় দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।